৪০১৫ সাল। শোনা গেল পৃথিবীর আবর্তনের গতি কমতে কমতে ৩০ ঘণ্টা হয়েছে। স্বভাবতই ২৪ ঘণ্টার দিনের হিসেবটা বদলে ৩০ ঘণ্টায় ঠেকেছে। যাইহোক,ব্যাপারটা একেবারে মন্দ নয়। দিনে ৬ ঘণ্টা বাড়তি সময় তো পাওয়া গেল। মানুষকে আর প্রতি মুহূর্তে ঘড়ি দেখে যন্ত্রের মতন চলতে হবে না। তবে এখানে যে ‘মুহূর্ত’ শব্দটা ব্যবহার করলাম সেটা কী ঠিক হলো? কত অল্প সময় বোঝাতে ‘মুহূর্ত’ শব্দের প্রয়োগ হয়! আসলে ৪৮ মিনিটে এক মুহূর্ত। অর্থাৎ দিন ও রাতের ৩০ ভাগের এক ভাগ। এমন আরও কিছু শব্দ আমরা সময়ের পরিমাপ বোঝাতে ক্ষণে ক্ষণে ব্যবহার করি। এই ‘ক্ষণ’ শব্দটি শুনলে মনে হয় মুহূর্তের চেয়ে কিছুটা বেশি সময়। প্রকৃতপক্ষে ক্ষণ হচ্ছে এক মুহূর্তের ১২ ভাগের এক ভাগ বা ৪ মিনিট। মানুষের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এবং শ্বারুদ্ধকর আবিষ্কার ঘড়ি। আমাদের হৃদযন্ত্রের মতন বিকল না হওয়া পর্যন্ত এক ‘দণ্ড’ সময়ও তার বিশ্রাম নেই। এক দণ্ডে কতটা সময় তা নিয়েও দ্বিধায় পড়তে হয়। অবশ্য এক দণ্ড বিরতি নিতে গেলে ঘড়ির কাঁটা প্রায় আধা ঘণ্টা পিছিয়ে যাবে। আর সত্যি সত্যিই যদি হৃদযন্ত্র এক দণ্ড বন্ধ থাকে তবে আমাদের মৃত্যুদণ্ড একেবারে সুনিশ্চিত! কারণ ২৪ মিনিটে এক দণ্ড সময়। কাজেই এসব শব্দ নিয়ে এক পলের জন্যও আর ভাববার অভিরুচি নেই। তথাপি ভাবতে হলো। এই পল মানে কতটুকু সময়? হ্যাঁ,আমার মস্তিষ্ক ঘড়ি জবাব দিল—এক পল মানে ২৪ সেকেন্ড সময়। ঘড়ির দোষ দিয়েই বা লাভ কী? যখন ঘড়ি ছিল না তখনও মানুষ সূর্যের অবস্থান দেখে এবং নানান উপায়ে সময় অনুমান করত। আর এভাবেই প্রচলন হয়েছিল—সূর্যঘড়ি, বাতিঘড়ি, জলঘড়ি। মজার ব্যাপার হলো, দিনের বেলা কেউ যদি উত্তর দিকে মুখ করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়—সে নিজের ছায়া দেখেই সময় বুঝতে পারবে। সূর্যের আলোতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ছায়ার আকৃতি ও অবস্থান পরিবর্তন হয়—যা ঘড়ির কাঁটার অনুরূপ। এই ছায়ার অনুকরণেই হয়তো যান্ত্রিক ঘড়ির বাহ্যিক আদল দেয়া হয়েছে। এই যান্ত্রিক ঘড়ি প্রথম চালু হয় চীন দেশে। এরপর আসে বৈদ্যুতিক ঘড়ি। পরবর্তী সময়ে ছোট চিপ বা একটুখানি সিলিকন চিলিতের ভিত্তিতে তৈরি হয় ডিজিটাল ঘড়ি। আজকাল এসেছে স্বয়ংক্রিয় মস্তিষ্ক ঘড়ি। স্রষ্টার আশ্চর্য সৃষ্টি আলো তথা সময়। তাই ৩০ ঘণ্টায় একদিন হোক কিংবা ২৪ ঘণ্টায় হোক—সময়ের ধারণা ছাড়া আমরা চলতে পারিনা। তবু সময় নিয়ে কত ঠিক বেঠিক ভাবনাই না আমরা প্রতিনিয়ত ভাবি। যেমন আমি ভেবেছিলাম নিমেষের মধ্যে এই পুচকে লেখাটা শেষ করব। সেটা কী আদৌ সম্ভব? নিমেষ মানে চোখের পলক পড়বার সময়টুকু। কিন্তু লিখতে বসে এক প্রহরেরও বেশি অর্থাৎ ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গেল। তাতেই বা ভাবনা কী? আগে ছিল একদিনে ৮ প্রহর। আর এখন তো দুটি প্রহর বাড়তি পাওয়া গেল। ভাগ্যিস এখন ৩০ ঘণ্টায় দিন! নাহয় আজ লেখাই হতো না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ধন্যবাদ। আপনার কবিতার চেতনাও ভালো লাগল। আমরা হয়তো বিশ্ব জগতের সব অকলাণ দূর কবে কেবল প্রমময়-জগত গড়তে পারব না। তবু কল্যাণময় শুভ প্রত্যাশা করা কম কিছু নয়। শুভ কামনা।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
ভাবতে অবাক লাগছে, এই বুড়ো বয়স পর্যন্ত ‘মুহূর্ত’, দন্ড, পলের প্রকৃত মান জানিনা! নিমেষেরটা জানা আছে। এখন জানলাম। কার সৌজন্যে? জানিনা। নাই বা হোল সাই-ফাই, চমতকার লিখেছেিল।লিখতে থাকুন।শুভেচ্ছা রইল।
মিলন বনিক
৪০১৫-তে দাড়িয়েও ছোট্ট পরিসরেিএকটা জটিল বিষয় নিয়ে লেখার কলেবর বৃদ্ধি না করেও-সূর্যঘড়ি, বাতিঘড়ি, জলঘড়ি-র মত প্রাগৈতিহাসিক ভাবনা গুলো খুব সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন...বিবর্তনবাদে হয়তো এমনই হবে একসময়...পূণঃ মুষিক ভবঃ...ভালো লাগলো...
ধন্যবাদ । আমার প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ''ধোঁয়াশা''-র পরিসমাপ্তিও ছোটগল্পে আঙ্গিকে করেছি। কেন জানি না লেখার এই ধরনটা আমার ভালো লাগে। এতে পাঠকের ভানার স্বাধীনতা থাকে--একটি লেখা পড়ে নিজর কল্পনায় সাজাতে পারে আরেক গল্প। লেখকও ইচ্ছে করলে সেখান থেকে আরেকটি গল্পের সূচনা করতে পারে।
ধন্যবাদ। আপনি ঠিকই বলেছেন। আসলে আমার এরকম অনেকগুলো লেখা আছে--যেগুলো না গল্প,না প্রবন্ধ। আবার নকশা জাতীয়ও নয়। এটি লিখেছিলাম ২০০৮ সালে।তখন কর্মস্থলে প্রচণ্ড কাজের চাপ যাচ্ছিল। যাইহোক,ভাষার পরে যেমন ব্যাকরণ এসেছে;কবিতার পরে ছন্দ--আমার এই লেখাগুলোও তেমনি কোন নতুন আঙ্গিক। এ ধরনের লেখার কী নাম দেয়া যায় বলুন তো?
ধন্যবাদ সালমা আপা। আসলে কম্পোজ করবার সময় পাই না বলে আমার মূল গল্পের সংক্ষিপ্ত রূপ গল্প-কবিতা ডট কমে জমা দিতে হয়। তবে এ লেখাটির মাঝের কিছু অংশ বাদ দিলেও --শেষটা ইচ্ছে করেই সমাপ্ত করিনি।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।